কিভাবে অ্যাফিলিয়েট ব্লগ তৈরি করবেন (বিস্তারিত)
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করতে চাইলে এই লেখাটি আপনার জন্য। এই লেখার মধ্যে আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বিষয় বিস্তারিত জানতে পারবেন। কিভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করবেন? কত টাকা ইনভেস্ট করবেন? ইত্যাদি বিষয় বিস্তারিত।
আমাদের দেওয়া প্রসেস গুলো নিয়ে কাজ করলে আপনার অ্যাফিলিয়েট ব্যবসা শুরু করতে সহজ হবে। সেই সাথে আপনি একটি পূঙ্গানো দিকনির্দশনা পাবেন।
তাহলে চলুন শুরু করা যাক………………হাতে সময় আছে তো আপনার।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য প্রাথমিক কাজ
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং একটি ব্যবসা। সুতরাং শুরু করার আগে আপনাকে ভালো ভাবে চিন্তা করতে হবে। কারন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য ইনভেস্টমেন্ট দরকার হয়। আপনাকে প্রতিটি কাজ স্টেপ বাই স্টেপ করতে। এখানে ভুল করার কোন জায়গা নেই। ভুল করলেই অনেক বড় ব্যবসায়িক ক্ষতি হয়ে যাবে আপনার।
সুতরা প্রতিটি কাজ চিন্তা-ভাবনা এবং পরিকল্পনার সাথে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
ব্লগিং করে অন্য ভাবে আয় করার উপায়
পণ্য নির্বাচন
আপনি সকল ধরনের পণ্য নিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন না। আপনাকে যে কোন একটি পণ্য বাছাই করতে হবে। এবং অবশ্যই এই কাজটি আপনি নিজে করতে চাইবেন। কিন্তু কখনো এই কাজটি নিজে করবেন না।
যারা পণ্য রিসার্স নিয়ে কাজ করে তাদের কাছে থেকে আইডিয়া নিতে হবে। আপনি যাকে হায়ার করবেন সেই ব্যক্তি আপনার অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার Niche বা Keyword বাছাই করার কাজটি করবে।
মনে রাখবেন, Niche একটি খুবেই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য।
ডোমেইন এবং হোস্টিং ক্রয়
আপনার ব্যবসার জন্য Niche বাছাই করা শেষ হয়ে গেলে ডোমেইন নাম রেজিঃ করতে হবে। Niche অনুযায়ি ডোমেইন নাম নির্বাচন করতে পারলে সব থেকে ভালো হয়। একটা উদাহরন দেওয়া যাক,
ধরলাম আপনি Niche হিসাবে weight loss পণ্য বাছাই করলেন। এখন আপনার ডোমেইন নামটি হওয়া উচিত www. weightlossproduct.com। কিন্তু এই ধরনের ডোমেইন নাম নাও পেতে পারেন। তবে চেষ্টা করতে পারেন, এই সকল ডোমেইন পাওয়ার জন্য।
আপনি চাইলে ১ জিবি হোস্টিং দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন। তবে ভালো হয়, আপনার হোস্টিং সাইজ ৩ জিবি থেকে বেশি হলে। আর একটি বিষয় হোস্টিং কোম্পানি বাইরের দেশের হলে ভালো হয়।
ওয়েবসাইট ডিজাইন
অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইট সাধারন ওয়েবসাইট থেকে একটু ভিন্ন হয়। এখানে প্রতিটি বিষয় ধাপে ধাপে করতে হবে। আপনি একজন অথবা কোন ওয়েবসাইট ডিজাইন কোম্পানির সাথে কন্ট্রাক করে কাজ করিয়ে নিতে পারেন।
তবে আমার মনে হয় Fiverr থেকে ডিজাইন করে নেওয়া ভালো হবে। এতে করে আপনার খরচ কম পড়বে।
অবশ্য আপনি চাইলে নিজেই নিজের ওয়েবসাইট ডিজাইন করতে পারবেন। ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট কিভাবে ডিজাইন করতে হয় তা আপনি ইউটিউব ভিডিও দেখে শিখে নিতে পারবেন।
হ্যাঁ, প্রথম অবস্থায় তেমন ভালো ডিজাইন করতে পারবেন না। তবে ট্রাই করলে অবশ্যই পারবেন। ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট কাস্টমাইজেশন করা শিখতে পারলে আপনার ব্যবসার জন্য ভালো হবে।
কন্টেন্ট রাইটিং
অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইটের সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ কন্টেন্ট রাইটিং করা। কারন অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইট থেকে যে কেমন আয় হবে তার নির্ভর করে ওয়েবসাইটের কন্টেন্টের উপর।
কেন কন্টেন্ট নিয়ে এতো কথা বলছি তার কারন আছে। একটু বিস্তারিত বলা যাক, ধরলাম আপনি আপনার ওয়েবসাইটে ইন্সুরেন্সের উপর লিখছেন। এবং লেখা শেষে বা লেখার মাঝে কোন ইন্সুরেন্স কোম্পানি নাম সাজেস্ট করছেন।
এখন আপনি যখন কোন কোম্পানির নাম সাজেস্ট করবেন তখন তার উপর মানুষের বিশ্বাস তৈরি করতে হবে। আপনি সঠিক ভাবে বিশ্বাস স্থাপন করতে না পারলে আয় করতে পারবেন না।
কোন ব্যক্তি আপনার লেখা পড়ার পর সেই ইন্সুরেন্স কোম্পানি থেকে একটি ইন্সুরেন্স ক্রয় করলে, আপনার আয় হবে।
কথা দিয়ে কাউকে ক্যাপচার হতে হলে আপনার লেখার গভীরতা কেমন হতে হবে বুঝতে পারছেন। অবশ্যই লেখার মধ্যে লজিক, প্রমান সহ সকল বিষয় বিস্তারিত থাকতে হবে।
এসইও (Search Engine Optimization)
উপরের উল্লেখ করা সকল ধরনের কাজ আপনি করলেন কিন্তু আপনার ওয়েবসাইটে কোন ভিজিটর নেই। ভিজিটর নাই মানে, ইনকাম নেই। শুধু ভিজিটর পেলেই হবে না, সঠিক ভিজিটর দরকার।
সঠিক ভিজিটর পাওয়ার জন্য এসইও করতে হবে। SEO একটি প্রসেস যা একদিন করা সম্ভব নয়। আপনি এসইও জন্য অর্থ খরচ করলেও তার রেজাল্ট পেতে পেতে মিনিমাম ৪ হতে ৫ মাস সময় লাগবে।
এবং এই অ্যাফিলিয়েট ব্যবসার জন্য মাক্সিমাম অর্থ খরচ হবে এসইও এবং কন্টেন্ট, দুইটি বিষয়ের উপর।
সফল ভাবে অনলাইনে ব্যবসা করার গাইডলাইন
অ্যাফিলিয়েট ব্যবসার জন্য ইনভেস্টমেন্ট
Niche: আপনি Niche নির্বাচন করার জন্য অবশ্যই কোন ফ্রিল্যান্সার সাথে কন্ট্রাক করতে হবে। Niche বাছাই করা কাজের জন্য আপনার সব্বোচ্চ খরচ হতে পারে ২০ থেকে ৩০ ডলার।
ডোমেইন এবং হোস্টিংঃ আপনি বাইরের কোন কোম্পানি থেকে ডোমেইন হোস্টিং ক্রয় করলে খরচ হবে প্রতি বছর ৩০ থেকে ৪০ ডলার। ( অব্যশ এই বিষয়টা নিদিষ্ট নয়, কম এবং বেশি হতে পারে)
ওয়েবসাইট ডিজাইনঃ এই বিষয়টা নিদিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। তার পরেও একটা ধরনা করা যেতে পারে। আপনি একটি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট কাস্টমাইজ করলে খরচ হবে ৫০ থেকে ৮০ ডলার। আবার একটু হাই কোয়ালিটির সাইট বানাতে গেলে খরচ হবে ১০০ থেকে ২০০ ডলার পর্যন্ত।
কন্টেন্ট রাইটিংঃ অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইটের সব থেকে বেশি খরচ হয় এই ক্ষেত্রে। আপনি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য ১০০০ ওয়াডের্র ১০০টি কন্টেন্ট লিখলে খরচ হবে মিনিমাম ২০০০ ডলার এর থেকে বেশিও হতে পারে। (প্রতি ১০০০ ওয়াডের্র কন্টেন্ট লেখার জন্য খরচ ধরা হয়েছে ২০ ডলার)
এসইওঃ একটি কম্পিলিট এসইও প্যাকেজ সম্পূর্ণ করার জন্য খরচ হবে ১৫০০ থেকে ২০০০ ডলার পর্যন্ত।
সর্বমোট খরচ (অনুমানিক)= ৪,২৭০ ডলার (বাংলাদেশি ৩৬৭,২২০ টাকা) ম্যাক্সিমাম
সর্বমোট খরচ (অনুমানিক)= ৩,৬৫০ ডলার (বাংলাদেশি ৩১৩,৯০০ টাকা) মিনিমাম
বি.দ্রঃ যদিও আমি মিনিমাম এবং ম্যাক্সিমাম হিসাবের কথা বলেছি। তারপরেও ইনভেস্টমেন্ট কম বেশি হতে পারে। উপরের হিসাব করা অর্থ কখনো নিদিষ্ট নয়।
অ্যাফিলিয়েট ব্যবসার আয়
উপরের ইমেজ টা দেখুন, এখানে ১ বছরের অ্যাফিলিয়েট আয় দেখানো হয়েছে। ( আমাদের উল্লেখ করা প্রতিটি ডকুমেন্ট ১০০% সত্য)
আপনি পরিপূর্ণ ভাবে একটি অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইট প্রতিষ্টিত করতে পারলে আপনার ক্যারিয়ার নিয়ে কোন চিন্তা করতে হবে না। তবে অবশ্যই প্রপার পথে আপনার অ্যাফিলিয়েট ব্যবসার প্রতিটি কাজ করতে হবে।
অ্যাফিলিয়েট ব্যবসার সমস্যা
আমার কাছে অ্যাফিলিয়েট ব্যবসার বড় সমস্যা মনে হয় সময়। কারন আপনি আজকে একটি অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইট তৈরি করলে কালকে থেকে ইনকাম হবে তা কিন্তু নয়।
অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইট থেকে আয় করার জন্য মিনিমাম সময় লাগতে পারে ৫ থেকে ৬ মাস। আমি বলতে চাচ্ছি, ওয়েবসাইট তৈরির করার ৫ হতে ৬ মাস পর আয় করা শুরু করতে পারবেন।
অ্যাফিলিয়েট ব্যবসার অন্য একটি সমস্যা হচ্ছে ইনভেস্টমেন্ট। অনেক জন এই ব্যবসা টা বুঝেন কিন্তু ইনভেস্টমেন্ট করতে চান না।
যা হোক, যত টুকু সম্ভব আমি আলোচনা করার চেষ্টা করছি। তার পরেও আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন
Click the above button to visit next page
You visited 1/10 pages