ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য সেরা ৬টি ওয়েবসাইট এবং আউটসোর্সিং শুরুর পদক্ষেপ
আপনি যখন এই লেখাটা পড়ছেন তখন দুই ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে পড়া শুরু করেছেন লেখাটা। এক আপনি ফ্রিল্যান্সিং বিষয়টা আপনার কাছে নতুন অথবা ফ্রিল্যান্সিং কাজ করছেন। ফ্রিল্যান্সিং কাজ করে নিজের অর্থনৈতিক স্বাধীনতার সাথে সাথে দেশ ও জাতির উন্নায়নে নিজেকে জড়াতে পারবেন। এই লেখার মাধ্যমে কিছু জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট এবং আউটসোর্সিং বিষয় বিস্তারিত জানতে পারবেন।
আপনার জীবনের ছোট খাটো স্বপ্ন গুলো পূরণ করার জন্য ফ্রিল্যান্সিং হতে পারে একটি উপযুক্ত মাধ্যম। চলুন আপনার স্বপ্ন পূরণের রাস্তায় আমার সামান্য কিছু সহযোগিতা। আশা করছি ভালো লাগবে আপনার।
ফ্রিল্যান্সিং শুরুর প্রথম পদক্ষেপ
আপনার ভালো লাগে এমন একটি বিষয় নির্বাচন করুন ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য। মার্কেট প্লেসে কোন কাজের দাম বেশি সেই দিকে নজর না দিয়ে, আপনাকে যে কাজটি ভালো লাগে তার দিকে নজর দিতে হবে। একটা উদাহরন দেওয়া যাক, আপনার খুব ভালো লাগে ভিডিও এডিটিং করতে কিন্তু ফ্রিল্যান্সি মার্কেট প্লেসে ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভলোপমেন্টের চাহিদা বেশি।
সুতরাং এ রকম অবস্থায় কোন ধরনের আপনি কোন ধরনের কাজ শিখবেন। আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হবে, যে কাজ আপনার ভালো লাগে সেই কাজটি শেখা।
মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করার কিছু সেরা উপায়
ফ্রিল্যান্সিং শুরুর দ্বিতীয় পদক্ষেপ
আপনার কাজ জানা থাকলে সরাসরি মার্কেট প্লেসে গিয়ে কাজ শুরু করতে পারবেন। কিন্তু আপনার যদি কাজ জানা না থাকে তবে Udemy অথবা বিভিন্ন ট্রেনিং সেন্টারে গিয়ে কাজ শিখে নিতে পারেন।
কাজ শেখা শুরু করার ক্ষেত্রে একটি বিষয় অবশ্যই মনে রাখবেন। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট প্লেসে প্রচুর প্রতিযোগিতা, সুতরাং ভালো ভাবে কাজ জানতে হবে। আপনার কাজের দক্ষতা মিনিমাম ৭০% হওয়া উচিত। বাকি দক্ষতা কাজ করতে করতে হয়ে যাবে। কিন্তু কম দক্ষতা নিয়ে কাজ করা শুরু করলে ব্যর্থ হওয়ার সম্ভবনা বেশি।
অনলাইন আয় কি? এবং কিভাবে শুরু করবেন
তৃতীয় পদক্ষেপঃ
শুধু ভালো ওয়ার্কার হলেই যে কাজ পাবেন তা কিন্তু নয়। কাজ পাওয়ার জন্য মার্কেট প্লেসের প্রফাইল খুবেই গুরুত্ব পূর্ণ একটি বিষয়। তার সাথে সাথে আপনাকে জানতে হবে কি ভাবে কাজ পাওয়া যায়। এবং কি ভাবে কাজ করতে হবে?
মনে রাখবেন আপনার থেকে ভালো ওয়ার্কার অনেক। সুতরাং তাদের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য সব কিছু সঠিক ভাবে করতে হবে। বায়ার সাথে কথা বলা, বিড করা, ইত্যাদি ছোট খাটো বিষয় গুলো সঠিক ভাবে শিখতে হবে। কাজ পাওয়া বিষয় গুলো ইউটিউবে বিভিন্ন ভিডিও দেখে শিখে নিতে পারেন।
মনে রাখবেন প্রথম কাজটি পেতে যতটা কঠিন হবে দ্বিতীয় কাজটি পেতে ততটাই সহজ হবে। লেগে থাকতে হবে কখনো হাল ছেরে দেওয়া যাবে না।
৬টি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং/আউটসোর্সিং ওয়েবসাইট
সমস্ত বিশ্বে প্রায় একশের বেশি ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট আছে তার মধ্য থেকে বর্তমান সময়ে জনপ্রিয় কিছু ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট নিয়ে আলোচনা করা হল। ওয়েবসাইট বিষয় জানানোর সাথে সাথে কাজের বিষয় এবং প্রতিযোগিতা নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব।
বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় ১০টি ফ্রিল্যান্সিং কাজ বিষয় বিস্তারিত পড়ুন
চলুন শুরু করা যাক আলোচনার মূল পর্ব…………………
Fiverr
ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করার জন্য Fiverr থেকে ভালো মাধ্যম হতেই পারে না। তাবে সব ধরনের প্রফেশনালের জন্য Fiverr সঠিক জায়গা নয়। যেমন আপনি যদি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হয়ে থাকে তাবে আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি আপনার জন্য ভালো প্লেস 99design সহ অন্য কোন প্লাটফর্ম।
ফাইবারে সর্ব নিম্ন কাজের মূল্য ৫ ডলার থেকে শুরু হয়। আপনি চাইলে আপনার কাজের মূল্য ইচ্ছামত বৃ্দ্ধি করতে পারবেন।
Fiverr প্রতিটি কাজের জন্য গিগ তৈরি করতে হয়। একজন ওয়ার্কার ইচ্ছামত গিগ তৈরি করতে পারবেন। ধরুন আপনি ভিডিও এডিটিং এবং সোশ্যাল মার্কেটিং কাজ জানেন। সেই ক্ষেত্রে আপনি দুইটি গিগ তৈরি করতে পারবেন।
Fiverr জয়েন করার সাথে সাথে আপনি যে কাজ পাবেন তা কিন্তু নয়। কারন Fiverr কাজ পাওয়ার জন্য অনেক ধরনের টেকনিক্যাল বিষয় আপনাকে জানতে হবে।
99Design
আপনি একজন প্রফেশনাল গ্রাফিক্স ডিজাইনার হলে ৯৯ডিজাইনার ওয়েবসাইট উপযুক্ত জায়গা আপনার জন্য। সকল ধরনের ডিজাইনের জন্য উক্ত ওয়েবসাইটি উপযুত্ত স্থান।
ধরুন, আপনি একজন প্রফেশনাল ওয়েবসাইট ল্যাডিং পেজ ডিজাইনার। সুতরাং আপনি এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রচুর কাজ পাবেন। তবে সকল ধরনের কাজ পাওয়ার জন্য আপনার প্রফাইল সাজানো সহ অন্য দিকে লক্ষ রাখতে হবে।
এই ওয়েবসাইটের একটি ভালো বৈশিষ্ট হল নতুন পুরাতন সকল ডিজাইনার কাজ পেয়ে থাকে। আপনি নতুন বা পুরাতন সেটা বড় বিষয় না, বরং আপনার কাজের কোয়ালিটি কেমন সেটাই বড় বিষয়।
আপনার কাজের মান ভালো হলে অবশ্যই ৯৯ ডিজাইন থেকে কাজ পাবেন। তাবে কাজ পাওয়ার জন্য প্রফাইল ভালো ভাবে সাজাতে হবে। আপনার প্রফাইলের উপর নির্ভর করবে কাজ পাওয়া।
উপরে উল্লেখ করা ফর্ম পূরর্ণ করে খুব সহজে ৯৯ ডিজাইন ওয়েবসাইটে ওয়েন করতে পারবেন। অবশ্য জয়েন করার পর প্রথমে ইমেইল ভেরিফিকেশন করতে হবে। তারপর প্রফাইল সাজাতে হবে সঠিক তথ্য এবং ইমেজ ব্যবহার করে।
কন্টেন্ট থেকে ভিডিও তৈরি করার অনলাইন কাজ
PeoplePerHour
এই একটি মাত্র ওয়েবসাইট যার মাধ্যমে আপনি ঘন্টা প্রতি কাজ করতে পারবেন। বিশেষ করে আপনি একজন কন্টেন্ট রাইটার হয়ে থাকলে এই ওয়েবসাইটে মাধ্যমে ফুল টাইম এবং পার্টটাইম কাজ করতে পারবেন।
আপনি এই ওয়েবসাইটে ওয়েন করার সাথে সাথে আপনার একাউন্টে একটিভ হয়ে যাবে তা কিন্তু নয়। সাইন আপ করার পর PeoplePerHour এক্সপার্ট আপনার প্রফাইল চেক করবে। সব কিছু ঠিক থাকলে আপনার প্রফাইল একটিভ হয়ে যাবে। একাউন্ট একটিভ হওয়ার পর আপনার প্রফাইল আপডেট করতে পারবেন।
আপনার প্রফাইল আপডেট করার পর উপযুক্ত কাজটি খুজে বের করুন এবং এ্যাপলাই করুন। দক্ষতা অনুযায়ি কাজের জন্য আবেদন করুন এবং কাজ শেষ করে পেমেন্ট।
উপরের ফর্ম দুইটি অপশন আছে এক ফ্রিল্যান্সার হয়ে কাজ করার জন্য দুই ফ্রিল্যান্সার হায়ার করার জন্য। উপরের দুইটি অপশনের মধ্যে একটি নির্বাচন করার পর ফেসবুক অথবা ইমেইল দিয়ে সাইন আপ সম্পূর্ণ করতে হবে।
Freelancer
আমার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার সর্ব প্রথম যে ওয়েবসাইটের নাম শুনেছি তার নাম হল Freelancer Dot com. খুবেই জনপ্রিয় একটি ওয়েবসাইট যার মাধ্যমে আমি আমার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলাম। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এই ওয়েবসাইটের ডিমান্ড কিছুটা কমে এসেছে।
একজন নতুন ফ্রিল্যান্সারের জন্য এই ওয়েবসাইটে প্রফাইল ওপেন করে কাজ পাওয়াটা কঠিন। তবে চেষ্টা করতে থাকলে অবশ্যই সফল হতে পারবেন। বড় বড় ফ্রিল্যান্সারদের পাশ কাটিয়ে কাজ পাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই সেরা প্রদান করতে হবে।
প্রফেশনাল প্রফাইল হওয়াটা জরুরি কাজ পাওয়ার জন্য। সঠিক ভাবে প্রফাইল তৈরি করতে পারলে যত বড় প্রতিযোগিতা হোক না কেন আপনি কাজ পাবেন। শুধু ধৈর্য এবং নিষ্টার সাথে লেগে থাকতে হবে।
উপরের উল্লেখ করা ফর্মটি পূরণ করলেই ফ্রিল্যান্সার ওয়েবসাইটে সাইন আপ করা সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। কিন্তু আগেই বলেছি জয়েন করাটা বড় বিষয় না, একজন প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সার হওয়াটা জরুরি।
ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করবেন যে ভাবে
Writeraccess
আপনি একজন কন্টেন্ট রাইটার হয়ে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করতে চাইলে writeraccess ওয়েবসাইটি আপনার জন্য। এই ওয়েবসাইটে Fiverr মত গিগ তৈরি করে বিক্রয় করতে পারবেন। এক্ষেত্রে অব্যশই আপনাকে একজন প্রফেশনাল লেখক হতে হবে।
এখানে সাইন আপ করাটা তুলনা মূলক ভাবে কঠিন। সঠিক ভাবে writeraccess সাইন আপ করতে না পারলে কাজ করার সুযোগ পাবেন না।
প্রথম অবস্থায় যে কোন একটি গিগ তৈরি করে কাজ শুরু করতে পারেন। সাধারনত আপনার আয়ের ৭০% আপনি, বাকি ৩০% পাবে কোম্পানি। প্রফাইল ওপেন করার ২ সপ্তাহের মধ্যে আপনি কাজ পাবেন এই ওয়েবসাইট থেকে।
writeraccess সাধারনত ওয়ার্ড প্রতি পেমেন্ট দিয়ে থাকে। ৫০০ ওয়ার্ড কন্টেন্ট লিখলেন, যদি প্রতি ওয়ার্ড ২ সেন্ট হয় তবে পেমেন্ট পাবেন ১০ ডলার। তবে ওয়ার্ড প্রতি পেমেন্ট নির্ধারন করার ক্ষমতা আপনার থাকবে।
উপরের দেখতে পাওয়া ফর্ম টি writeraccess ওয়েবসাইটের। উপরের জয়েন বাটনে ক্লিক করলে উপরের ফর্মটি আসবে।
ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা সম্ভব
Designhill
প্যাকেজিং এবং টি শার্ট ডিজাইন কাজ করে নেওয়ার জন্য Designhill উপযুক্ত একটি ওয়েবসাইট। আপনি একজন প্রফেশনাল টি শার্ট ডিজাইনার হলে এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন।
এখানে প্রতি কাজের ভ্যালু অন্য সব ওয়েবসাইটের থেকে অনেক বেশি হওয়ার সাথে সাথে একজন ডিজাইনার হয়ে বিভিন্ন বিভাগে কাজ করার সুযোগ পাবেন।
এখানে প্রায় ডিজাইন প্রতিযোগিতা হয় যেখানে অংশ গ্রহন করে প্রাইজ মানি জিতে নিতে পারেন। প্রতিটি প্রতিযোগিতার প্রাইজ মানি ১০০ ডলার থেকে শুরু হয়।
সর্বপরি আপনার কাজের মান ভালো হলে Designhill কাজ শুরু কতে পারেন। এবং নিজের অনলাইন ক্যারিয়ারে একজন ডিজাইনার হয়ে পর্দাপন শুরু করুন।
উপরের ফর্মটি পূরর্ণ করে Designhill জয়েন সম্পূর্ণ করুন। ইমেইল এ্যাড্রেস, পাওয়ার্ড, শর্ত টিক দিয়ে সহজে Designhill সাইন আপ করা যায়।
ফ্রি এবং পেইড ব্লগিং করার মধ্যে পার্থক্য
শেষ কথা
মানুষ বেঁছে থাকে স্বপ্ন দেখার মাধ্যমে। আমি বলব স্বপ্ন দেখুন এবং তার পেছনে ছুটুন যতক্ষন না পর্যন্ত স্বপ্ন সত্যি হবে। বিশ্বাস, পরিশ্রম, ধৈর্য্য এই তিনটি বিষয়ের উপর সফলতা নির্ভর করে।
পৃথিবীর কোন কিছুই সহজ নয়, সততার পথে। সততার সহিত ভালো কিছু করতে চাইলে কষ্ট, ত্যাগ, তিতিক্ষা সয্য করতে হবে। এটাই সত্যি এটাই বাস্তবতা……………..
ভালো থাকবেন সবাই……….
Click the above button to visit next page
You visited 1/10 pages