অনলাইনে পণ্য বিক্রয় করে আয় করার কৌশল
অনেক শিক্ষত বেকার যুবক যুবতী অনলাইনে পণ্য বিক্রয় করে নিজেকে স্বাবলম্বী করে তুলছে। এবং অনেকে অনলাইনে পণ্য বিক্রয় করে তার ক্যারিয়ার তৈরি করছে।
এই লেখার মধ্যে আমি তুলে ধরতে চেষ্টা করব কি ভাবে শুরু করবেন অনলাইন ব্যবসা। এবং অনলাইনে কোন কোন ধরনের সমস্যার সমুক্ষিন হতে পারেন।
বিষয়বস্তু গুলো টেবিল আকারে সাজিয়ে আলোচনা শুরু করা যাকঃ
- অনলাইনে কোন ধরনের পণ্য বিক্রয় করার জন্য নির্বাচন করবেন।
- নতুন পণ্যের আইডিয়া কোথায় পাবেন।
- পণ্য বিক্রয় করার জন্য কোথায় বিজ্ঞাপণ দিবেন।
- কি ভাবে বিজ্ঞাপণ তৈরি করবেন।
- পণ্যের মূল্য কি ভাবে নির্ধারন করবেন।
অনলাইনে পণ্য বিক্রয় – বাছাই
বেশির ভাগ উদ্যোক্তা পণ্য নির্বাচন করার ক্ষেত্রে ভুল করে থাকে। হাতের কাছে পাওয়া যায় এমন পণ্য নির্বাচন করা যাবে না। এমন পণ্য নির্বাচন করলে তা অনলাইনে বিক্রয় করতে পারবেন না।
কমন পণ্য বিক্রয় করা যে একবারে যায় না, সে আমি বলতে যাব না। কারন অনেক উদ্যোক্তা কমন অনলাইন পণ্য বিক্রয় থেকে ভালো আয় করে। কিন্তু এখানে একটা বিষয় হয়তোবা কেউ জানে না অথবা জানে।
আমি বিষয়টা একটু ক্লিয়ার করতে চাই। বেশি ভাগে ক্ষেত্রে নতুন কমন পণ্যের অনলাইন শপ থেকে পণ্য ক্রয় করে পরিচিত মানুষ। যারা একে অপরকে সাথে আগে থেকে জানে।
তারপর আস্তে আস্তে মানুষের যখন বিশ্বাস হয় যে এই ব্যাক্তি ভালো পণ্য বিক্রয় করে তখন মানুষ আপনার পণ্য ক্রয় করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করবে।
সোস্যাল বুকমার্কিং ওয়েবসাইট থেকে ফ্রি আয়
অনলাইন আয়ের বিভিন্ন উপায় নিয়ে বিস্তারিত
পণ্য নির্বাচন
বিক্রয় করার জন্য এমন পণ্য নির্বাচন করুন যা আপনার এলাকায় আছে অন্য কোন এলাকায় পাওয়া যায় না। এলাকা ভিত্তিক এমন অনেক খাবার পণ্য, ব্যবহারের পণ্য পাওয়া যায় যা অন্য এলাকায় পাওয়া যায় না।
অথবা এমন পণ্য বাছাই করুন যা অনেক আগে মানুষ ব্যবহার করত কিন্তু এখন করে না। এলাকা ভিত্তিক সংস্কৃতির সাথে জড়িত পণ্য বাছাই করতে পারেন যা আপনি অনলাইনে বিক্রয় করবেন।
ক্রিয়েটিভ পণ্য বিক্রয় করতে পারেনঃ যে পণ্যটি আপনি নিজ থেকে তৈরি করেছেন তা অনলাইনে বিক্রয় করতে পারেন। ক্রিয়েটিভ পণ্য তৈরি করাটা খুব কঠিন কাজ নয়।
শৈখিন পন্যঃ আপনি শৈখিন পণ্য বিক্রয় করতে পারেন অনলাইনে। শৈখিন পণ্য বলতে মাটির ব্যাংক, শো পিস, ফুল দানি, ফটোফ্রেম, মাটির তৈরি পট, ইত্যাদি।
ইউনিক পণ্যঃ চায়না কিছু পণ্য দেখবেন ফেসবুকে, ইউটিউবে যা সাধারনত আমাদের দেশে দেখা যায় না। যারা বাইরের দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে তাদের সাথে যোগাযোগ করে এই সকল পণ্য আনতে পারেন এবং অনলাইনে বিক্রয় করে ভালো টাকা আয় করতে পারবেন।
খাদ্যঃ আপনি চাইলে এমন খাদ্য অনলাইনে পণ্য বিক্রয় করতে পারেন যা সহজে বাজারে পাওয়া যায় না। আমি কিছু দিন আগে ফেসবুকে দেখলাম একজন গরু ভুটি পরিষ্কার করে অনলাইনে বিক্রয় করছে এবং মানুষ ক্রয় করছে।
আপনি এমন কিছু খাদ্য পণ্য বাছাই করতে পারেন যা মানুষ খেতে চায় কিন্তু ঝমেলার কারনে খেতে পারে না।
যা কখনো করবেন নাঃ
আমরা অনেকই মনে করি যে কোন পণ্য ফেসবুকের মাধ্যমে বিক্রয় করা সম্ভব। কিন্তু আপনার এই ভাবনাটি একবারে সঠিক নয়।
কমন পণ্য নিয়ে কাজ শুরু করা যাবে না। কমন পণ্য নিয়ে কাজ শুরু করলে সময় এবং টাকা দুটোই নষ্ট হবে।
How to Find Product to Selling in online
বিজ্ঞাপন এবং বাজেট
আপনি যে ধরনের পণ্য বিক্রয় করবেন তার উপর ভিত্তি করে বাজেট তৈরি করতে হবে। যেহেতু সমস্ত ব্যবসাটা বিজ্ঞাপন নির্ভর সেহেতু এমন বাজেট তৈরি করতে হবে তা যেন সঠিক ভাবে কাজ করে। আবার এমন বাজেট তৈরি করা যাবে না, যে বাজেটে পণ্য বিক্রয় করা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।
আপনি ফেসবুককে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য বেছে নিতে পারেন। কারন যে কোন ধরনের ইউনিক পণ্য ফেসবুকের মধ্যে বেশি বিক্রয় হয়।
ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার আগে আপনাকে বুঝতে হবে ফেসবুক মার্কেটিং কি? আপনি যদি মনে করেন পণ্যের একটি ছবি আপলোড করে বুস্ট করে দিলেই আপনার পণ্য বিক্রয় হবে তা কিন্তু একবারেই সঠিক ধারনা নয়।
আপনার পণ্যের জন্য কোন ধরনের বিজ্ঞাপন ভালো হবে এবং কোন ধরনের বিজ্ঞাপন দিলে ভালো বিক্রয় হবে এটা শুধু একজন ফেসবুক মার্কেটারে বুঝতে পারবে।
আমরা অনেকই ফেসবুক মার্কেটারকে টাকা দিতে হবে এই জন্য তাদের সাথে যোগাযোগ করি না। কিন্তু এই রকম অনেক ফেসবুক মার্কেটার আছে যারা অল্প কিছু টাকার বিনিময় আপনার বিজ্ঞাপনটা সুন্দর ভাবে সাজিয়ে দিবে।
একটি ভালো মানের বিজ্ঞাপন, পণ্যের বিক্রয় দ্বিগুন পরিমান বৃদ্ধি করে।
বাজেট প্রতিদিনঃ ২০০ টাকা (ফেসবুক বিজ্ঞাপনের জন্য)
অনলাইন পরামর্শক কাজ করে আয় করুন
পণ্যের মূল্য নির্ধারন এবং বিজ্ঞাপন তৈরি
পণ্যের বিজ্ঞাপন নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই তাই সরাসরি পণ্যের মূল্য নির্ধারন নিয়ে কথা বলা শুরু করছি। একটি পণ্যের মূল্য নির্ধারন করার পূর্ব অবশ্যই বেসিক কিছু চিন্তা মাথায় রাখতে হবে।
যেমন পণ্যের আসল মূল্য, বিজ্ঞাপন খরচ, ডেলিভারী খরচ, ইত্যাদি বাদ দিয়ে ২০% থেকে ১৫% ল্যাভাংশ ধরে পণ্যের মূল্য নির্ধারন করতে হবে।
নিজের তৈরি করা পণ্য হলে অন্য ভাবে মূল্য নির্ধারন করতে হবে। এটা সম্পূর্ণ ভাবে নির্ভর করবে আপনার উপর।
যদিও পণ্যের মূল্য নির্ধারন করা আপনার সিদ্ধান্ত তবুও বলব এমন মূল্য নির্ধারন করা যাবে না, যা পরর্বতীতে ব্যবসা শুরু করতে সমস্যা সৃষ্টি করে।
ভাই মার্কেট একবার তৈরি করে নিতে পারলে পরবর্তী ব্যবসা করতে সহজ হবে।
ফেসবুক থেকে আয় করার বিভিন্ন উপায়
অনলাইনে পণ্য বিক্রয়ের ওয়েবসাইট
কিছু ওয়েবসাইট আছে যার মাধ্যমে আপনি আপনার পণ্য বিক্রয় করতে পারবেন। একটু ক্লিয়ার করা যাক। আপনার কিছু পণ্য আছে যা আপনি বিক্রয় করতে চাচ্ছেন কিন্তু আপনার ওয়েবসাইট নাই।
সেই ক্ষেত্রে কিছু ওয়েবসাইট আছে যারা তাদের ওয়েবসাইটের মধ্যমে আপনাকে পণ্য বিক্রয় করার সুযোগ দিবে।
Daraz Online Shopping: দারাজ বর্তমান সময়ের বিশ্বাস্য যোগ্য ই-কমার্স ওয়েবসাইট। আপনি চাইলে আপনার পণ্য দারাজ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিক্রয় করতে পারবেন। অনলাইনে পণ্য বিক্রয় করার জন্য দারাজ একটি ভালো মাধ্যম।
উপরের তিনটি সাধারন স্টেপ ফলোকরলে আপনি দারাজে পণ্য বিক্রয় করার অনুমতি পাবেন।
একটি ভালো বিষয় হল দারাজের মাধ্যমে আপনার পণ্য সেল করলে দারাজকে যে কমিশন দিতে হয় তা নিত্যান্তই কম। তবে প্রতিটি বিষয়ে যেমন সুবিধা অসুবিধা থাকে তেমনি দারাজে পণ্য বিক্রয় করার সুবিধা এবং অসুবিধা দুটোই আছে।
Evaly Online Shopping: Evaly দারাজের মতই একটি ওয়েবসাইট। যদিও Evaly ওয়েবসাইটে কিছু এক্সট্রা ফির্চার আছে।
আপনার দোকানের পণ্য Evaly ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিক্রয় করতে পারবেন। ই-কমার্স ওয়েবসাইটের মত একটি ওয়েবসাইট পাবেন যার মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় করতে পারবেন।
Evaly ওয়েবসাইটে শপ তৈরি করার জন্য কোন ধরনের খরচ করতে হয় না।
অনলাইনে পণ্য বিক্রয় বিষয় বিস্তারিত ভাবে জানার জন্য নিচের দেওয়া ভিডিও টি দেখতে পারেন।